আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ওই দিন মামলার পরবর্তী তারিখও ধার্য করা হয়েছে।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আদালতে শুনানি করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ ও আবদুল্লাহ আল নোমানসহ বিভিন্ন গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবার সদস্যরা।
শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর উল্লেখ করেন যে, শেখ হাসিনার সরাসরি তত্ত্বাবধানে আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম সংঘটিত হয়েছে এবং এ ঘটনার জন্য তাকে ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি’ হিসেবে দায়ী করা হয়েছে। প্রসিকিউটর জানান, শেখ হাসিনার নির্দেশে একাধিক গুমের ঘটনা ঘটেছে এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কিছু পরিবারকে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
এ মামলার অভিযুক্তদের মধ্যে শেখ হাসিনাসহ চার জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যান্য তিন আসামি হলেন সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান। উল্লেখযোগ্য, জিয়াউল আহসান ইতোমধ্যে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আছেন।
এছাড়া, জাতিসংঘ মিশনে পদোন্নতির লোভে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা গুমের মতো অপরাধে জড়িত হয়েছেন বলে প্রসিকিউটর উল্লেখ করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি মামলা চলছে, এবং এই মামলায়ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এর আগে, গুমের দুটি পৃথক মামলায় এক এক আসামি করা হয়েছে। একটিতে রাঙামাটির পুলিশ স্পেশাল ট্রেনিং স্কুলের সাবেক পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন ফারুকী এবং অন্যটিতে বরিশাল রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।
এই মামলার শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারের আবেদন করেছে এবং তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।