নিজের আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ও মায়াময় আচরণের আড়ালে ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন ইসরাত সাদিয়া। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী হলেও, তার নামে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ উঠে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে তিনি একের পর এক ভুক্তভোগীদের প্রতারণার জালে ফাঁসিয়েছেন।
সোহাগ নামের এক ভুক্তভোগী জানান, ফেসবুকে ইসরাত সাদিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। কিন্তু এই সম্পর্কই তার জীবনে ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ইসরাত প্রেমের আড়ালে নানা অজুহাতে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে প্রায় এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন।
আরেক ভুক্তভোগী আরাফাত জানান, অনলাইনে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ইসরাত তার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তার নামে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা আদায় করেন। শুরুতে আর্থিক সমস্যার কথা বলে টাকা নিলেও পরবর্তীতে তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখেননি।
বাবু নামের আরেক ভুক্তভোগী জানান, ইসরাত তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার বাসায় ডেকে নেন। সেখানে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং সেই মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে সেই ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে বাবুর কাছ থেকে কয়েক দফায় মোট ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
আরেক ভুক্তভোগী, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, জানান, ফেসবুকে ইসরাতের সঙ্গে পরিচয়ের পর তিনি প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। কয়েক মাসের মধ্যেই ইসরাত তাকে বিয়ের আশ্বাস দেন। তবে পরে পরিবারের আর্থিক সমস্যার কথা বলে তার কাছ থেকে প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা নেওয়ার পর ইসরাত তার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন এবং মুঠোফোনে তাকে ব্লক করেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ইসরাত সাদিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তরুণদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর আর্থিক সমস্যার কথা বলে সহানুভূতি আদায় করেন এবং কখনো ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। তার প্রতারণার ধরন শুধুমাত্র আর্থিক নয়; তিনি মানসিক ও সামাজিকভাবে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে ইসরাত সাদিয়ার বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে মুঠোফোনে ব্লক করে দেন।
ভুক্তভোগীরা ইসরাত সাদিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা এই ধরনের প্রতারণা থেকে অন্যদের সতর্ক থাকার আহ্বান করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এমন প্রতারণার ঘটনা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এসব প্রতারককে আইনের আওতায় আনার মাধ্যমে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা জরুরি। অন্যথায় সমাজে এই ধরনের ঘটনা মানুষের বিশ্বাস ও পারস্পরিক সম্পর্কের প্রতি আঘাত হানতে থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা
।